Apr 10, 2013

শতভাগ ইসলামী অনুশাসন যাঁরা মেনে চলেন, তাঁদের জন্যও এক অশনী সংকেত... হেফাজতে ইসলাম

ইসলামের জন্য হেফাজতে ইসলাম কতটা নিরাপদ, আজকে আমরা এই বিষয়েই দেখব। মূলত ফোকাস থাকছে আলিম, ধর্মাচরণে বের হওয়া মানুষের প্রতি। সেইসাথে সাধারণ নিত্যদিনের মুসলমান মানুষের প্রতি আচরণটাও বাদ যাচ্ছে না। আর ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তাদের আচরণের কথা তো তোলারই কোন মানে হয় না। এই বিষয় স্বত:সিদ্ধ। পরধর্মাবলম্বীদের প্রতি আক্রমণমুখী মিলিট্যান্টদের আচরণ বরং অন্য লেখাতে পরিষ্কার করা যায়। অনুসন্ধানী পোস্টে স্বাগত। মেগাপোস্ট করতে চাই না, কিন্তু মেগাপোস্ট ছাড়া বিষয় স্পষ্ট হয় না। আমরা অসহায়।

কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ। পোস্টটা স্টিকি হওয়াতে এর কন্টেন্টগুলো আরো একবার ঝালিয়ে নিয়েছি। আরো একটু এডিট করেছি। আশা করি সহব্লগার বন্ধুরা বিষয়টাকে স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখবেন এবং প্রয়োজনে পুরো পোস্ট আবার পড়ে দেখবেন।

বাংলাদেশের সাম্প্রতিক তিনটা ঘটনা তুলে আনতে হয় শুরুতেই।

চট্টগ্রামে অরাজনৈতিক ইসলামিক প্রতিষ্ঠানে আগুন


"হেফাজতে ইসলামীর ডাকা আজকের সকাল-সন্ধ্যা হরতালে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলার অন্তরগত মাহিলিয়া টিলা এলাকায় গাউসিয়া কমিটি বাংলাদেশ ফটিকছড়ি থানার আওতাদিন মাহিলিয়া টিলা শাখার অফিস কক্ষ পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে হেফাজতে ইসলামীর কর্মীরা । এতে আল্লাহর পবিত্র কোরআন শরীফ সহ আরো অর্ধ শতাদিক ধর্মীয় কিতাবাদি পুড়ে ছাই হয়ে যায় । আজ সকাল ১০.৩০ মিনিটের সময় হেফাজতে ইসলামীর কর্মীরা এই অফিসের সামনে দিয়ে একটি মিছিল নিয়ে যায় । এই সময় গাউসিয়া কমিটির অফিসে হামলার আশংকায় কমিটির সদস্যরা সকাল থেকে অফিসের সামনে অবস্থান নেই । পুলিশ এসে সংঘর্ষ হওয়ার আশংকায় গাউসিয়া কমিটির সদস্যদের চলে যেতে বললে তারা চলে যায় । প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানাই, গাউসিয়া কমিটির সদস্যরা এখান থেকে চলে যাওয়ার আধ ঘন্টা পর ১১.০০ দিকে দুদিক থেকে আরো দুইটি মিছিল এসে এই অফিস ভাংচুর করতে থাকে একসময় তারা কেরোসিন আর পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিয়ে দ্রুত চলে যায় । এতে গাউসিয়া কমিটির অফিস এবং তার পাশে থাকা একটি মুদি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।"

আমরা মরি, পুড়ি, হই ছাই!
আবার ছাই থেকে উৎরাই।
আমরা ঝলকে সামনে ধাই,
আবার চমকে পিছনে চাই,
আমরা জেগেছি, জাগব,
জেগেইতো আছি,
পশুর ক্ষমা নাই।


হাদ্বরাত শাহজালাল ইয়ামানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহির মাজার


বাংলাদেশের মানুষ এম্নি এম্নি মুসলমান হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ তলোয়ার দেখে মুসলমান হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ হিন্দু মহিলাকে রিকশা থেকে নামিয়ে নাজেহাল করে মুসলমান হয়নি। বাংলাদেশের মানুষ ইসলামের মহত্ত দেখেছে। উদারতা দেখেছে।
বাংলাদেশে আজকে কমবেশি ৯০% মুসলমান হওয়ার পিছনে মূল অবদান ছিল মাত্র তিন-চারজন ব্যক্তির। তাদের ভালবাসা, তাদের উদারতা, তাদের সহিষ্ণুতা, তাদের প্রশান্তি।

খাজা মুঈনুদ্দীন আজমিরি র., যিনি ছিলেন সূফি সাধক। চিশতীয়া তরিক্বার ইমাম। শাহজালাল ইয়ামানি র.। না। তিনিও শুধু মক্তবধারী আলিম নন। তিনি প্রধান প্রতিনিধি ছিলেন সোহরাওয়ার্দিয়া তরিকার ইমাম সোহরাওয়ার্দী র.'র। আর সোহরাওয়ার্দী র. ছিলেন ক্বাদিরিয়া তরিকার ইমাম গাউসে পাক জিলানী র.'র অন্যতম প্রতিনিধি। শাহ মাখদুম র., রাজশাহী। তিনি ছিলেন গাউসে পাক জিলানী র.'র দৌহিত্র। তাঁর প্রতিনিধি বা খলিফা। শাহ আলী র., মিরপুর। তিনি ছিলেন ক্বাদিরিয়া ধারা ও চিশতিয়া ধারার প্রতিনিধি। এই কথা অস্বীকার করার কোন যো নেই। কারণ, শাসন কখনো মুসলিম করতে পারে না। কখনো করতে পারেনি। ভালবাসা পেরেছিল, পারছে, পারবে।

ঠিক কী কারণে শাহজালাল র.'র পবিত্র সমাধিতে পরপর আটবার, আট আটটা বার বোমা হামলা হল? শাহ জালাল র. কোন্ ভুল করেছিলেন বাংলাদেশে ইসলাম এনে? যে বোমা হামলা হল, সেগুলোতে আহত হয়েছেন যাঁরা, তাঁরা কোন ধর্মাবলম্বী?


চট্টগ্রামের দশ আলিম হত্যার জন্য হামলা


দশজন আলিম। তাঁদের কেউ মিসরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি পর্যায়ের ডিগ্রিপ্রাপ্ত, কেউ ভারত-পাকিস্তান ও আরবের বড় বড় মাদ্রাসায় পড়েছেন, কেউবা শুধু দেশেই। তাঁদের কেউ শায়খুল হাদিস (১ লক্ষ হাদিসে পূর্ণ দক্ষতা না থাকলে কাউকে শাইখুল হাদিস বলা যায় না।) কেউ মুফাসসির ( ১৫ টির অধিক তাফসির গ্রন্থে সার্বক্ষণিক দক্ষতা না থাকলে মুফাসসির বলা যায় না) কেউ মুফতি (ফিকাহ ও উসূল আল ফিকাহ্ শাস্ত্রে দক্ষতা না থাকলে মুফতি বলা যায় না। আলীয়া পর্যায়ে মুফতির সমমান হচ্ছে এমফিল। কারণ আলীয়া মাদ্রাসা পর্যায়ে মাস্টার্সের সমমান কামিল শেষ করার পর দুই বছর সময় লাগে মুফতি ডিগ্রি পেতে। কোন শর্ট কোর্স নয়।) কেউ বিশ্বখ্যাত অনুবাদক (কুরআন, হাদীস, তাফসির ও হাদীসের বর্ণনার অন্তত ৪০০০ পৃষ্ঠার অনুবাদ করার অভিজ্ঞতা সম্পণ্ন।) আর একজন তো স্বয়ং জাতীয় মসজিদের সম্মানিত খতিব!

কেন?
কারণ জানা গেল, তাঁরা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করেছেন যে, সাঈদী ভুল তাফসির করে। জানা গেল, এই কথা তাঁরা গত চার দশক ধরেই বলে আসছেন। জানা গেল, তাঁরা এই বিষয়ে বই লেখেন।

এতবড় অপরাধ! হত্যা তো করতেই হবে!


সাইয়্যিদ আল বুতির জন্য কান্না


সাইয়্যিদ (নবী বংশীয়) আল্লামা, শহীদ আল মিহরাব, গ্রেইট ইসলামিক স্কলার অভ লেভ্যান্ট, মুহাম্মাদ সাঈদ রামাদ্বান আল বুতি আর কতদিন বাঁচতেন? উনআশি বছর বয়স। কিন্তু তাঁর দৌহিত্র, ছেলের ছেলে বাঁচতো আরো বহুদিন। বাচ্চা একজন।

তাঁরা দুজনেই, এই মার্চ মাসের ২১ তারিখ, মসজিদে কুরআন হাতে শিক্ষা দেয়া কালীন অবস্থায় এই জঙ্গী গোষ্ঠীর আত্মঘাতী বোমা হামলায় শহীদ হন।

আল বুতি অপরাধী। আল বুতিকে বোমা মেরে উড়িয়ে দাও! কারণ তিনি ষাটটার উপর বই লিখেছেন। কারণ তাঁর বক্তব্য দেশে দেশে টেলিভিশনে প্রচারিত হয়। কারণ তিনি আল আযহার বিশ্ববিদ্যালয়ে শরিয়াহ বিষয়ে ডক্টরেট ডিগ্রিধারী। কারণ তিনি দামেষ্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র!

সিরিয়া, ইরাক, তুরস্ক ও ইরানে এই সূফি সাধক শাইখের বক্তব্য প্রকাশিত হয়। তাঁকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে খাক করে দাও!

শাইখ সাইয়্যিদ আল বুতি অপরাধী। কারণ তিনি আস সালাফিয়্যাহকে বলছেন আল-লা মাজহাবিয়্যাহ্। তিনি অপরাধী, কারণ ফিক্বাহ, উসুল আল ফিক্বাহ, শাফিই মাজহাব, মাজহাব ছাড়াই পূর্ণ ইসলামের শরিআহ্ তে ছিলেন একজন পূর্ণ পন্ডিত। তিনি কথা বলেন কেন? তাঁকে ছিন্নভিন্ন করো বোমাতে। হুমকি দাও বছরের পর বছরের পর বছর জুড়ে।

সাথে সাথেই, মসজিদের ভিতরে মারা যান ৩০ জন মানুষ । কোন্ ধর্মের তারা? পরে মারা যান আরো ১৫ জন , কোন্ ধর্মের তারা?


শাইখ সাইয়্যিদ আফেন্দি আল চিরকেয়িস্কি


যাঁর উপাধী, মহান আল্লাহর প্রতি প্রেরণায় উৎসাহিত, যাঁর বয়স ৭৫ বছর, তাঁকেও কি বাসায় ঢুকে পাঁচ পারিবারিক সদস্য সহ বোমা মেরে খুন করতে হবে?

২৮ আগস্ট, ২০১২। কোনও সুদূর মধ্যযুগ নয়। মহান সূফি সাধক আফেন্দিকে কবরে নামানোর আগে চোখ মুছছেন দিগন্ত বিস্তৃত জানাজায় অংশ নেয়া লক্ষ লক্ষ মানুষ। রাশিয়ার দাগিস্তানে, তাঁর শহর চিরকিয়েস্কে।

The suicide bomber who killed Chirkeisky and at least five of his followers on August 28 has been identified as Aminat Saprykina. Russian media quoted security officials as saying she was the wife of a fundamentalist Islamic militant who has long been on the police wanted list.
জবাব চাই হেফাজতে ইসলামের সমর্থকদের কাছ থেকে। তালিবান-আল ক্বায়িদাহ্- শিবির আর হিজবুত তাহরীরের নারী ও পুরুষ সমর্থকদের কাছ থেকে, আপনারাই ভাল বলতে পারবেন, কোন্ বিষ এই নারীর কানে ঢালা হয়েছিল?



মাত্র ৪২ জন, লাহোর


দাতা গঞ্জবখশ আউলিয়া, বা শেখ ফরিদুদ্দিন আত্তার বা শেখ ফরিদ নবী বংশীয় একজন ইসলাম প্রচারক, সাধক। তিনি চট্টগ্রামের চশমা পাহাড়েও অবস্থান করেছিলেন, বাংলাদেশেও ইসলাম প্রচার করেছিলেন।

A Taliban fighter told reporters his group carried out the attack, the third on Sufi shrines in a year.

দু বছর আগের কথা। লাহোরে তাঁর পবিত্র মাজারে বোমা হামলা হয়। একেবারে ভিতরে। কারা ছিলেন সেখানে? মুসলিম সবাই। আলিম, শাইখ আর শিশুও।

পরের ছবিতে মাজারে যে বোমা হামলা হয়, তাতে এত মানুষ মরেনি । মাত্র চারজন। এছাড়া আরেক হামলায় পাকিস্তানেই ২ জন
আরো হামলা- Last week, the grandson of a prominent Sufi cleric was killed when a roadside bomb targeted the cleric's convoy.



৫২ জনকে মাজারে বোমা মেরে হত্যার দায়ে তালেবান নেতার ফাঁসি

In the sixteenth attack on Sufi shrines in two years, Taliban suicide bombers killed 49 and injured 93 Sufi devotees at a shrine
এই হামলাটা ছিল দুই বছরে ১৬ তম হামলা!

পাকিস্তানেই, লাহোর থেকে ৪০০ কিলোমিটার উত্তরে এন্টি টেরোরিজম কোর্ট ২০১০ সালে হজরত শাখি সারওয়ার বাবার মাজারে বোমা হামলায় ৫২ জন মানুষ হত্যার দায়ে আক্রমণের মূল পরিকল্পনাকালী তালেবানের নেতা বেহরাম খান সহ আক্রমণ পরিকল্পনাকারী ৫২ জনকে মৃততুদন্ড প্রদান করেন।

৫২ যাবজ্জীবন দন্ড হয় আরেক আত্মঘাতী হামলাকারী, হামলার সময় ধরা পড়ে যাওয়া ১৪ বছর বয়েসি বাচ্চা ছেলে ওমর ফিদায়ি এর।

ওই হামলায় ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়।

তেহরিক ই তালেবান পাকিস্তান যখন পুরো আদালত উড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিতে থাকে, তখন পাকিস্তান সেন্ট্রাল জেলে সরিয়ে নেয়া হয় আদালত।


শিয়া সমাগম, নামা ও মরণ


গত ত্রিশে ডিসেম্বর। পাকিস্তানের কোয়েটায়, ধর্মীয় উদ্দেশে রওনা হওয়া শিয়াদের বাসের সবটুকু উবিয়ে দেয়া হয়। বিশজন মৃত। পঁচিশজন কী করে বেঁচে ছিল এ এক রহস্য। আর গত ১৭ জানুয়ারি, ইরাকে একই ঘটনা। একই দিনে পথে দুই জায়গায় বিষ্ফোরণে নিহত ৭ জন। আবার এর বাইরে ৪ জন। আবার একই সপ্তাহে বোমা বিষ্ফোরণে ৪২ জন। গত এক দশকেই শত শতবার হামলা হয়েছে হাদ্বরাত আলী রা., হাদ্বরাত হুসাইন রা. ও তাঁদের অনেক বংশধরের পবিত্র সমাধিতে। হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে সেসব হামলায়। মানুষ। যারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ কালিমা পড়ে, তারা। অনেক অনেক বার ভেঙে পড়েছে তাঁদের পবিত্র মাজারের গম্বুজ, মিনার।
অসংখ্যবার হামলার দায় স্বীকার করেছে আল কায়েদা ও তালেবান গোষ্ঠী।


যে কথা বলার কোন মানে নেই

মওদুদীর আদেশে পাকিস্তানে ৪,০০০ কাদিয়ানী নিহত হয়। তাদের বিশ্বাস ভুল ছিল, তারা অমুসলিম, খুব ভাল কথা। তাই তাদের হত্যা করা হয়। মওদুদীর ফাঁসি হলেও মধ্যপ্রাচ্যের চাপে তাকে খালাস দেয়া হয়। পরকালে মধ্যপ্রাচ্যের রাজাবাদশারা চাপ দিতে পারবেন তো?

বাংলাদেশে পাকিস্তানি মিলিটারিকে সহায়তা করে মওদুদীর দল। জামাতে ইসলামী। বাংলাদেশে ত্রিশ লাখ মানুষ মারা যায়। আচ্ছা, ধরে নিই ত্রিশ হাজার মানুষই মারা যায়। মুসলিমই বলি, ৮০% ছিল মুসলিম। সে হিসাবে ২৪ হাজার। ২৪ হাজার হত্যার দায় কাঁধে। এই মানুষগুলো বিরাট দোষী। তারা স্বাধীন দেশ চেয়েছিল।

গত ১৫ বছর যাবত বাংলাদেশে কতগুলো বোমা হামলা হয়েছে জঙ্গীদের দ্বারা? কত জায়গায় হামলা হয়েছে? গত ২ মাসে কতগুলো বোমা ডিফিউজ করা হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন ডিসি অফিস, আদালত ও নানা জায়গা থেকে?

আরো কত অযুত নিযুত হিসাব যে আছে, তা বের হবারও নয়, দেখা যাবারও নয়।


আপনারা যারা দান করেন

জানি, টাকাটা, নিজের বুকের সন্তানটাকে ওইসব মাদ্রাসায় পাঠানো হয় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। আলিম তৈরি করার জন্য। ধর্মের বাণী মুসলিম ও অমুসলিম উভরের কাছে পৌছানোর জন্য। কিন্তু ঠিক কী কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে তা?
টাকাটা কেন দেন? সন্তানকে কেন ভর্তি করান ওইসব প্রতিষ্ঠানে?
জাতীয় পতাকা জ্বালানোর জন্য?
শহীদ মিনার ভাঙার জন্য?
১৪ বছর বয়েসি ওই ওমর ফিদায়ির মতো আরো শিশু তৈরি করার জন্য?
শাহজালাল মাজারে একের পর এক বোমা হামলায় অংশ নেয়ানোর জন্য?

নিজেকে প্রশ্ন করার সময় এসেছে। সমর্থন আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য জানাই। কিন্তু সে সমর্থন দেশ ও জাতির উপরে কাল হয়ে নেমে আসবে কিনা, তা ভাবার সময় হয়েছে।


গণজাগরণ বন্ধ করো

উপরের ছবিটি কী বলছে? ছবিটি বলছে যে, অনেকের কথা অনুযায়ী এই পোস্টে আমরা মিথ্যাচার করেছি, তাই নয় কি?
নিচের ছবিটির দিকে তাকিয়ে থাকি আমরা।
ভাবি, এই মানুষটা কি আমার মা হতে পারতেন না?
বা বোন?
তার জন্য নাকি বিচার চাওয়া যাবে না। আহা! এই মানুষটার জন্য ন্যায়বিচার চাওয়া যাবে না!


আর নারীর উপর আক্রমণ যে খুবই সাধারণ একটা বিষয়, শারমীনের এই সাহসিক চোখের উপর শক্তিশালী পুরুষ হাতপা গুলো নেমে আসাতেই সে কথা প্রতীয়মান হয়।
ধর্ম নয়, রাষ্ট্রের কথাতেই আসি, শারমীন সৌদি আরবে থাকেন না, যে তাঁকে রাষ্ট্রীয় আইনে বোরখা পরতে বাধ্য করা যাবে। আর বোরখা বা হিজাবের তো আলাদা আলাদা সংজ্ঞায়ন আছে ইসলামের বিভিন্ন মাজহাবে। ফিকাহ শাস্ত্র অনুসরণ করতে গেলে মাজহাবের শরণাপণ্ন হওয়া ছাড়া উপায় নেই। বাংলাদেশে পরম ধার্মিক নারী যেমন সারা শরীর বোরখায় ঢেকে চলেন, কেউ তাঁদের ঘাঁটায় না, আবার আমি নিজেই অসংখ্য অগুণতিবার চার্চের নানদের পাশাপাশি হেঁটেছি। বাংলাদেশে খ্রিস্টানগণ যে সংখ্যার দিক দিয়ে কম, তা টেরই পাওয়া যায় না নানদের প্রতি সাধারণ মানুষের ব্যবহার দেখে। বাংলাদেশে হিন্দু মহিলা শাঁখা সিঁদুর নিয়ে শাড়ি পরে গমনাগমন করেন। কেউ সাধারণত তাঁর ধর্মপরিচয়ের কারণে পথে সমস্যা সৃষ্টি করে না।
আর শারমীন, এক হেলমেট পরা, বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরা নারী সাংবাদিক, টেস্টাস্টেরনের শক্তিতে বলীয়ান পুরুষদের হাতে চড় ঘুষি লাথি খেলেন। এখনো তিনি হাসপাতালে। তিনি কি সম্পূর্ণ শরিয়াহ মেনে গিয়েছিলেন সেখানে? না-ই হতে পারে। কিন্তু তিনি তো একজন মানুষ। একজন বাঙালি। একজন মুসলিম। একজন সাংবাদিক এবং, আক্রমণ করার সময় ভুলে গেলে চলবে না, একজন নারী।

আচ্ছা, ঠিক কোন্ শিক্ষায় দীক্ষিত হলে একজন পুরুষ, পুরুষ মাত্রই শারীরিক দিক দিয়ে শক্তিশালী, নারীর শরীরে দাঁড়িয়ে থেকে লাথি চালাতে পারেন? আরে, নারীকে তো তৈরি করা হয়েছে অধিকতর কোমল করে। তার মাতৃত্বের জন্য। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য। কী করে প্রকাশ্য জনপথে তাঁর উপর আক্রমণ হয়?

আর, শারমীন কোন ধর্মের মানুষ?

0 comments:

Look

Technology Used by Successwful Businesses

Internet Speed Test